স্বদেশ ডেস্ক:
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গত মাসের শেষে বহুজাতিক বাহিনীর প্রত্যাহার কার্যক্রমের মধ্যেই উগ্রবাদী আইএসের তৎপরতা রোধে চালানো মার্কিন ড্রোন হামলায় সাত শিশুসহ ১০ নিরাপরাধ ব্যক্তির নিহত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বজনেরা।
শনিবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির সাথে সাক্ষাৎকারে তারা হামলার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের অধীন জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
এর আগে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৯ আগস্ট কাবুলের ড্রোন হামলাকে ‘ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি।
ড্রোন হামলায় নিহত ত্রাণকর্মী জামারি আহমাদির চাচা মোহাম্মদ নাসিম শনিবার বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির কাছে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটি (ক্ষমা প্রার্থনা) আমাদের কাছে অগ্রহনযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে স্বীকার করা।’
নাসিম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাত শিশুসহ নিরীহ নিহতের হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের অধীন জবাবদিহিতা আদায়ের আহ্বান জানান।
ড্রোন হামলায় নিহত তিন শিশুর বাবা ও জামারি আহমাদির ভাই রোমাল আহমাদি আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘এটি (ক্ষমা প্রার্থনা) কী
করে গ্রহণযোগ্য হতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘তাদের উচিত আমার কাছে এসে ক্ষমা প্রার্থনা ও দুঃখ প্রকাশ করা।’
এদিকে জেনারেল ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছিলেন, পেন্টাগন হামলায় নিহতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ দিতে সম্ভাবনার তালাশ করছে।
আফগানিস্তানের সাবেক এক বিচারক আবদুল আজিজ শোয়াইব আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘নিরাপরাধ লোককে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধ। ‘
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধাপরাধ মামলার উদ্যোগ নিতে পারে, যারা এই হামলার সাথে জড়িত ছিলো।
চলতি বছরের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে বহুজাতিক বাহিনীর প্রত্যাহারের মধ্যেই ২৬ আগস্ট কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উগ্রবাদী সংগঠন আইএস আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। ওই হামলায় ১৩ মার্কিন সৈন্যসহ ১৭৫ জন লোক নিহত হয়।
আইএসের তৎরতা রোধে ২৯ আগস্ট কাবুলে সন্দেহভাজন আইএস লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় সাত শিশুসহ ১০ ব্যক্তি নিহত হয়।
পরে তদন্ত শেষে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানায়, হামলার লক্ষ্যবস্তু কোনো আইএস ঘাঁটি নয়, বরং দাতব্য সংস্থায় কাজ করা এক সাধারণ আফগান নাগরিকের বাড়ি ছিলো।
সূত্র : ইয়েনি শাফাক